হার্ট ভালো রাখতে যা করবেন: হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ও
করনিয়:
ছবি: সংগ্রহীত
হার্ট ভালো রাখতে যা করা প্রয়োজন:
১। খাবার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। প্রচুর পরিমানে শাকসবজি খেতে হবে। শর্করা এবং চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত তেলেভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন।
২। মাছের ডিম, মাছের মগজ, পনির, ডিমের কুসুম, মাখন যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেস্টা করতে হবে।
৩। বাড়তি লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। বেশি বেশি মাছ খেতে পারেন। মাছের তেলে আছে ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড’। যা আপনার হৃদপিন্ডের জন্য অনেক বেশি কার্যকারী হতে পারে।
৫। লাল মাংস না খাওয়ার চেস্টা করুন। পামাপাশি মুরগির চামড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৬। শালগম, সয়াবিন, শুকনা শিমের বিচি ও মটরশুঁটি বেশি খাবেন। এগুলো হৃদপিন্ডের জন্য ভালো।
৭। সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধা-ঘণ্টা হাঁটতে হবে। তবে অনে জোরে হাঁটার প্রয়োজন নেয়।
৮। লিফটে চড়া থেকে বিরত থাকুন। খুব বেশি দরকার না হলে লিফট ব্যবহার করবেন না।
৯। একটানা বেশি সময় বসে থাকা যাবে না। মাঝে মাঝে স্থান পরিবর্তন করুন ও সম্ভব হলে ৫-১০ মিনিট হেঁটে আসুন।
১০। সবসময় ওজন, রক্তচাপ ও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেস্টা করুন।
১১। নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টরলও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
১২। ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার যেমন, লেবু, আমলকী, কাঁচামরিচ, পেয়ারা বেশি খাবেন।
১৩। টিনজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার সবসময় এড়িয়ে চলুন। সবসময় টাটকা খাবার খাওয়ার চেস্টা করুন।
১৪। দেহের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
১৫। সবসময় হাসিখুশি থাককার চেস্টা করুন।
১৬। কোনো বিষয় নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা বা উত্তেজনা থেকে বিরত খাকুন।
১৭। সম্ভব হলে আসেপাশের সবার সঙ্গে কথাবার্তা বা গল্প করুন।
১৮। সময় সুযোগ পেলে গান গাইতে পারেন মনের আনন্দে।
১৯। মাজর মজার বই - উপন্যাস পড়ুন।
২০। সকল প্রকার নেশা জাতীয় জিনিস, এলকোহল, তামাক, ধূমপান বর্জন করুন।
আরও জেনে রাখুন: হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে ভালো খাবার হলো ফল ও সবজি। অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবার হৃদরোগের জন্য বেশি ক্ষতিকারক। নিয়মিত স্বাস্থ পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার এবং কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। রক্তচাপ পরিমাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রনও জরুরি।
যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে:
১। বেশির ভাগ সময় হার্ট অ্যাটাকে বুকের মাঝখানে চাপ বোধ হতে পারে। যা কয়েক মিনিটের বেশি সময় ধরে হয়ে থাকে। এ ব্যথাটা মাঝেমধ্যে চলে যেতে পারে, আবার ফিরে আসেতে পারে। একটা অস্বস্তিকর চাপ ও ঝাঁকুনি অনুভব হতে পারে।
২।মাঝেমাঝে বাহু, পিঠে, ঘাড়ে, চোয়ালে অথবা পাকস্থলীতেও অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।
৩। কখনো কখনো বুকে অস্বস্তির সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস ছোট হয়ে আসে।
৪। বাকি লক্ষণগুলোর সাথে ঘাম দিয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া ও বমি বমি ভাব বা হালকা মাথাব্যথা হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে যে সব লক্ষণ দেখা যায় তা পুরুষ ও নারীদের ক্ষেত্রে আলাদা রকমের হতে পারে। পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়া। তবে পুরুষের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে অন্য লক্ষণগুলো বেশি দেখা যায়, যেমন ছোট শ্বাস, বমি বমি ভাব, পিঠে বা চোয়ালে ব্যথা।
হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিক করনিয়:
রোগীদের প্রথমে শুইয়ে দিন। এরপর জিহ্বার নিচে একটি এ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। যদি পাওয়া যায় তবে এ্যাসপিরিনের পাশাপাশি একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেট রাখতে হবে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই হার্টের মাংসপেশির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। তবে সবচেয়ে ভালো হয় দ্রুত নিকটস্থা হাসপাতাল বা স্বাস্থকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারলে।
0 Comments