Add

তালমিছরি খাওয়ার উপকারিতা , অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম - Tal Mishri

তালমিছরি
তালমিছরি

তালমিছরি - Tal Mishri 

তালমিছরি  (Tal Mishri) খাওয়ার উপকারিতা যেমন বেশি তেমনি এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মিষ্টি। যাকে বলা হয় আনপ্রসেসড সুগার। তালমিছরিতে ব্যাবহার হয়ে থাকে খাঁটি তালের রস। ঠান্ডা-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা সহ অনেক অসুখ দূরে রাখতে এটি কাজ করে।  অনেকে পেটের নানা সমস্যায় ভুগেন। তাদের জন্যও তালমিছরি অনেক বেশি উপকারী। এটি খেতেও অনেক সুস্বাদু। দুলাল চন্দ্র ভাড়ের তালমিছরি অনেক বেশি পরিচিত। দুলাল চন্দ্র ভাড়ের তালমিছরি এর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। বাজারে বা বিভিন্ন অনলাইন শপে এটি ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় পাওয়া যায়।

তালমিছরি (Tal Mishri) খাওয়ার উপকারিতা:

তালমিছরি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিচে কিছু উপকারিতা দেওয়া হলো।

১. আনিমিয়া : তালমিছরিতে প্রচুর পরিমান আয়রন। যাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য Tal Mishri খুবই উপকারী। বিশেষ করে নারীদের জন্য তালমিছরি খুব উপকারী। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে।

২. হাড়ের সমস্যা সমাধান :  বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় ক্ষয় হওয়া কিংবা হাঁটুতে ব্যথা সহ হাড়ের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এসব ক্ষেত্রে Tal Mishri খুবই উপকারী হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। যে কারণে এটি হাড় ও দাঁত শক্ত করে তোলে ও হাড়ের নানা রকম সমস্যা দূর করে।

৪. শিশুদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন : শিশুদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখার জন্য তালমিছরি খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে।

৫. সর্দি ও কাশি দূর করতে: সর্দি ও কাশি দূর করতে পারে Tal Mishri। এর রস কাশি উপশম করে ও গলার শ্লেষ্মা নরম করে দিতে সাহায্য করে। ফলে খুসখুসে কাশির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এক টুকরো তালমিছরি মুখে নিয়ে রাখলে সর্দি ও কাশিতে অনেক আরামও পাওয়া যাবে।

৬. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও  কিডনির পাথর রোধ : দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও কিডনির পাথর রোধ করতেও সহায়তা করে তালমিছরি। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে Tal Mishri প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে রাখা যেতে পারে।

৭. হজমে সাহায্য করতে: তালমিছরি হজমে সাহায্য করে এবং আমাশয় নিরাময়ে সহায়ক। এ ছাড়া মুখের আলসার বা ঘা রোধ করতে পারে তালমিছরি। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।

৮. সাইনাসজনিত মাথাব্যথা সারাতে: অনেকেরই সাইনাসজনিত মাথাব্যথার সমস্যা থাকে। আদার রসের সঙ্গে Tal Mishri মিশিয়ে খেলে সাইনাসজনিত মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

তালমিছরি খাওয়ার উপকারিতা এর মধ্যে এই সকল উপকারিতা উল্লেখযোগ্য।

তালমিছরি খাওয়ার নিয়ম:

দুলাল চন্দ্র ভাড়ের তালমিছরি অনেক বেশি পরিচিত। খাঁটি তালের গুড় দিয়ে মিছরি বানানো হয়। তাল থেকে তৈরি তালমিছরি দেহের নানা উপকারে আসে।এর উপাদানগুলো মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে সহায়তা করে থাকে।

তালমিছরি খাওয়ার উপকারিতা অনেকটা এটি খাওয়ার নিয়মের উপর নির্ভর করে। নিচে কিছু তালমিছরি খাওয়ার নিয়ম দেওয়া হলো:

চিনির বিকল্প: তালমিছরি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মিষ্টি। এতে খুব কম পরিমাণে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) থাকে। যা রক্তের সুগারের ওপর কম প্রভাব পড়ে। ডায়াবেটিস সমস্যায় যাদের চিনি খাওয়ায় সমস্যা আছে তারা তালমিছরি খেতে পারেন।

বিভিন্ন খাবারের সাথে: সুজি, সেরেলাক ,হালুয়া, বিস্কুট ,শরবত ,কেক, ইত্যাদ বিভিন্ন মিস্টি খাবারে চিনির পরিবর্তে মিছরি ব্যবহার করতে পারেন।

অনেক সময় ডাক্তার ছোট বাচ্চাদের চিনি খাওয়াতে নিষেধ করে। কিন্তু অনেক মায়েরা চিনির পরিবর্তে কি দিবেন তা নিয়ে খুব টেনশন করেন তাই বাচ্চাদের খাবারের একটু মিস্টি স্বাদ আনতে এতে Tal Mishri যুক্ত করতে পারেন। (ডাক্তারের পরামর্শ জরুরী )

তালমিছরি অপকারিতা:

উপকারের পাশাপাশি তালমিছরি অপকারিতা ও আছে। এটি নিয়মিত খাওয়া ভালো, তবে অন্যান্য খাবারের মতোই এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন অতিরিক্ত মিছরি খেলে কী সমস্যা হতে পারে-

হজম ভালো করার জন্য মিছরি খাওয়া হয়। কিন্তু এটি অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা তৈরি হতে পারে।

মিছরি কিছুটা শীতল ধরনের। তাই এটি বেশি পরিমাণে খেলে অনেক সময় ঠান্ডা লাগা বা সর্দির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

যদি আপনি  নিয়মিত কোনো ওষুধ খেয়ে থাকেন, তবে সেক্ষেত্রে আপনার তাল মিছরি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ মিছরি ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments