Add

নখকুনি রোগের কারণ , লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা:

নখকুনি রোগের কারণ , লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা:


nail-disease
চিত্রঃ পায়ের নখকুনি রোগ (সংগ্রহীত) ।




nail-disease
চিত্রঃ হাতের নখকুনি রোগ (সংগ্রহীত) ।



শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে নখ একটি। সৌন্দর্য পরিচর্যার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল নখ। বিশেষ করে প্রত্যেকেই কমবেশি তাদের নখ  নিয়ে সচেতন থাকে। মেয়েদের নখ নিয়ে নানা ধরণের আর্টও এখন ফ্যাশানের অংশ ।  ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে নখে দেখা দিতে পারে নানা রোগ। তার মধ্যে নখকুনি অন্যতম। নখ রোগ আক্রান্ত হলে বিপত্তির শেষ নেই। 

নখকুনি খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ। বিশেষকরে বর্ষায় নখকুনি সমস্যা বেশি দেখা দেয়। মাঝে মাঝে এ রোগ শীতকালেও হয়ে থাকে।  হাতের বা পায়ের নখে এই সমস্যা দেখা দিলে বেশ কয়েক দিন হাঁটাচলা বা কাজ করতে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হয় শীতকালে এ সমস্যা দেখা দিলে। 


কদের এ রোগ বেশি হয়?

১.অনেকক্ষণ ধরে যারা  জলে কাজ করেন বা জল নিয়ে নাড়াচাড়া করের তাদের এই রোগ হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি।

২.কাঁদা, ধুলা, মাটি, ঘাম থেকেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। যারা এগুলোর মধ্যে বেশি থাকেন তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক।

৩.অনেক বেশি ছোট করে নখ কাটলে নখকুনি দেখারদিতে পারে। 

৪.নখের কোণায় কাঠি বা কোনো বোস্তু দিয়ে বারবার খোচালে এ রোগ দেখা দিতে পারে।

৫.যরা অতিরিক্ত বেশি নখের নেলআর্ট বা প্রসাধনী ব্যবহার করেন তাদের এ সমস্যা হতে পারে। 

৬. নখের যথাযত পরিচর্যা না করলে এ রোগের দেখা দিতে পারে। 

তবে এ রোগের জন্য ক্যানডিডা অ্যালবিক্যানস নামে এক ধরণের ছত্রাক অনেক বেশি দ্বায়ী বলে মনে করা হয়।


উপসর্গ:

প্রথমত, নখের গায়ে লেগে থাকা ত্বক ফুলে ওঠে, হালকা লাল বর্ণ ধারণরকরে। পেকে গেলে সাদাটে বর্ণ হতে পারে। নখের কোণায়  প্রচন্ড  ব্যথা হয়। তবে ইনফেকশনও হয়ে গিয়ে ফোলা অংশটি অনেক  লাল হয়ে যেতে পারে। ফোলা অংশের ভিতরে পুঁজ হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

নখের পাশের ত্বকের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া ফাটলের মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ভিতরে প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করে। ফলে আরও অনেক বেশি যন্ত্রণা হতে থাকে।


ঘরোয়া চিকিৎসা:

নখকুনির সমস্যায় ভোগা মানুষজন উপোষম লাভের জন্য অনেক রকমের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। কেউ কেউ ফল পেলেও অনেকে তেমন ভালো ফলাফল পান না। যারা অনেক কিছু করার পরেও নখকুনি সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না পাচ্ছেন না তারা নখের যত্নে এবং নখকুনি থেকে রেহাই পেতে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ফলো করে দেখকে পারেন।

আসুন জেনে নেওয়া যাক নখকুনির কিছু ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে...

১.রসুন এর ব্যবহার: কয়েক কোয়া রসুন কুচিয়ে নিন তারপর ১ কাপ সাদা ভিনেগারের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।  মিশ্রণটি নখকুনি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে রাখুন। যত দিন সমাধান না হয় ততদিন ব্যবহার করতে পারেন। আশাকরি দ্রুত উপকার পাবেন। 

২.বাম এর ব্যবহার: আমরা অনেক সময় মাথা ব্যাথা করলে বাম ব্যবহার করে থাকি। যা বিভিন্ন ব্রান্ড অনুযায়ী বিভিন্ন নামে পরিচিত। নখকুনি  হলে আপনি বাম লাগিয়ে দেখতে পারেন। বাম নখকুনি সমস্যার উপোষমে অনেক ভূমিকা রাখে। 

৩.সাদা ভিনেগারের ব্যবহার: ২ কাপ হালকা গরম পানিতে ১ কাপ সাদা ভিনেগার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই ভিনিগার মেশানো পানিতে দশ থেকে পনেরো মিনিট নখকুনি আক্রান্ত আঙুলটি ডুবিয়ে রাখুন। তার পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেরে যাবে নখকুনি।

৪.টি ট্রির তেল ব্যবহার: ১ চা চামচ নারকেল তেলে ৩-৪ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। এই তেল তুলা বা কটনবাত দিয়ে নখকুনিতে আক্রান্ত অংশে ভালোভাবে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। দিনের মধ্যে কয়েক এভাবে ব্যবহার করতে পারলে দ্রুত সেরে যাবে নখকুনি।

৫.অ্যাপল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার: ২ কাপ পানিতে ২ কাপ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণে ৩০ মিনিট নখকুনি আক্রান্ত আঙুলটি ডুবিয়ে রাখুন। তারপর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে সেরে যাবে নখকুনি সমস্যা। 

৬.পাতিলেবুর ব্যবহার: নখকুনি আক্রান্ত জায়গায় ২-৩ ফোঁটা পাতিলেবুর রস লাগান। তারপর ২০-২৫ মিনিট রেখে উষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করুন। 

৭.ভুট্টার গুড়োর ব্যবহার: কিছু ভুট্টার গুড়ো  জল দিয়ে ফুটিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ব্যথা নখে লাগান।

৮.ইউরিয়া আছে এমন ক্রীম ব্যবহার: ইউরিয়া রয়েছে এই ধরণের ক্রিম নখকুনি আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।  ভালো ফল পাবেন।

তবে সবচেয়ে উত্তম হলো নখকুনি হওয়ার আগে সতর্ক থাক ও নিয়মিত নখের পরিচর্যা করা।


আরও পড়ুনঃ 

কোমর ব্যাথার কারণ : কোমর ব্যাথার প্রতিরোধ :কোমর ব্যাথায় প্রয়োজনীয় কিছু টিপস


কিডনি নষ্ট হওয়ার অন্যতম কিছু অনিয়ম। কিডনি নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ: যা মেনে চলা জরুরী। 

Post a Comment

0 Comments