বন্ধ্যাত্ব !
বন্ধ্যাত্বার কারন পুরুষ অথবা মহিলা অথবা উভয়ের কারণে হতে পারে। বন্ধ্যাত্বের অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। কিছু প্রকারভেদ দেওয়া হলো।
প্রকারভেদ :
১। প্রাথমিক বন্ধ্যাত্ব যখন কোন মহিলার কখনই গর্ভসঞ্চার হয়নি।
২। সেকেন্ডারী বা অর্জিত বন্ধ্যাত্ব অতীতে কখনও গর্ভ সঞ্চার হয়েছিল কিন্তু পরে দম্পত্তি বিগত এক বছর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে এক সাথে থাকার পরও গর্ভধারন করতে পারিনি।
শুধু নারী নয়, পুরুষদের ক্ষেত্রেও বন্ধ্যাত্বের অনেক কারণ লক্ষ
করা যায়। কিছু কারণসমূহ :
১। যৌন সক্ষমতা না থাকলে।
২। শুক্রাণু তুলনামূলক কম উৎপন্ন হলে।
৩। শুক্রাণু পুরোমাত্রায় নির্দিষ্ট বেগে গতিশীল না হলে।
৪। শুক্রাণুর আকৃতি প্রয়োজনের তুলনায় স্বাভাবিক না হলে।
৫। যৌনবাহিত রোগের কারণে স্পার্ম বা শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতিশীলতা কমে গেলে।
৬। বয়স বৃদ্ধি পেলে যার কারনে শুক্রাণুর সংখ্যা অনেক কমে গেলে।
৭। যৌন বার্ধক ঔষধ সেবন এর ফলে পুুরুষের যৌন ক্ষমতা কমে গেলে।
৮। অন্ডকোষে আঘাত লাগলে।
৯। বিভিন্ন রোগের কারনে শুক্রাণুর উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেল।
১০। থাইরয়েড হরমোনের প্রভাব জনিত কারনে হরমনের তারতম্য হলে।
১১। বহুমূত্র রোগ বা উচ্চরক্তচাপ থাকলে।
১২। অন্ডকোষের পুং হরমোন তৈরীর কোষ লেডিগ সেল এবং শুক্রাণু তৈরীর কোষ সারটোলি সেলের ত্রুটি থাকলে।
১৩. কোন সংক্রমণ বা আঘাতের ফলে শুক্রাণু ভিতর থেকে বের হবার পথ বন্ধ হয়ে গেলে।
১৪। উশৃঙ্খল জীবনযাপন, ধূমপান, মদ্যপান করলে ছাড়াও বিভিন্ন নেশাযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে।
১৫। প্রতিদিনের বিশ্রামে অভাব হলে।
১৬। অতিরিক্ত গরমে অনেক সময় কাজ করলে ।
১৭। টাইট আন্ডারওয়্যার পড়লে।
১৮। অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা করলে।
১৯। নিয়মিত বিষন্নতার ঔষধ সেবন করলে ।
২০। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে।
একজন নারীর ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের যে সকল কারণহতে পারে:
১। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের না হলে বা বের হলেও তাদের আকৃতি স্বাভাবিকের মতো না দেখালে।
২। জরায়ুতে টিউমার দেখা দিলে।
৩। জন্মগতভাবে জরায়ুতে ত্রুটি থাকলে।
৪। যোনির মুখে বিভিন্ন সমস্যা থাকলে।
৫। ডায়াবেটিস বা ডায়বেটিস জনিত রোগ বা বহুমূত্র রোগ থাকলে।
৬। পিটুইটারী গ্রন্থির কোন সমস্যা হলে।
৭। থাইরয়েড হরমোনের কোনো সমস্যা থাকলে।
৮। বহুমূত্র রোগ বা উচ্চরক্তচাপ থাকলে।
৯। কোন সংক্রমণ বা আঘাতের ফলে শুক্রাণু বের হবার পথ বন্ধ হয়ে গেলে।
১০। ডিম্বাণু নিসরণের আগে ও পরে কিছু কিছু হরমোন নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী নি:সৃত না হলে।
১১। ডিম্বনালীর গঠনে সমস্যা থাকলে।
১২। জরায়ুর মধ্যের আস্তরণ জরায়ুর ভিতরের অংশ ছেড়ে ডিম্বনালী, ডিম্বাশয় বা জরায়ুর পিছন দিকে ছড়িয়ে গেলে।
১৩।যৌনাঙ্গে যক্ষা জাতীয় রোগ হলে।
১৪। উশৃঙ্খল জীবনযাপন, ধূমপান, মদ্যপান করলে বা বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করলে।
১৫। প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব হলে।
১৬। নিয়মিত বিষন্নতার ঔষধ সেবন করলে ।
১৭। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে।
বন্ধ্যাত্বের যৌথকারণ :
১। সঠিক পদ্ধতিতে, সঠিক সময়ে সহবাস করার জ্ঞানের অভাব থাকলে।
২। মারাত্মক পুষ্টিহীণতার কারণে অনেক সময় গর্ভসঞ্চার হয় না।
বন্ধ্যাত্বের কারণ নির্ণয়ে পরীক্ষা :
১। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
২। স্বামীর বীর্য পরীক্ষা করা দরকার।
৩। স্ত্রী ডিম্বাণু তৈরী ও নি:সরণ হচ্ছে কিনা তা যথাযথ পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
৪। জরায়ু এবং ডিম্বনালী পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
৫। জরায়ুর ভিতরের স্তরের ঝিল্লি পরীক্ষা করা দরকার।
৬। স্বামী ও স্ত্রীর হরমোন পরীক্ষা করা দরাকর।
এসকল বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে বন্ধাত্বার মতো গুরুতর সমস্যার সমাধান করা সমম্ভব।
প্রয়োজনে একজন হরমোন ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বিশেষ পরামর্শ গ্রহণ করা প্রোয়োজন।
0 Comments