গাজরের যত গুণাগুণ-
প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দেশে শীতকালে প্রায় সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো গাজর। গাজর শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সারা বছর পাওয়া যায়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এটিতে রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণে ভরা। গাজর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি৬। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর বায়োটিন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, অর্গানিক সোডিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ। গাজর শুধু পুষ্টি সরবরাহ করে তা নয়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে থাকে। ত্বকতে উজ্জ্বল রাখতে গাজরের ভূমিকা অনেক।
আসুন জেনে নেই প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা-
১। গাজর খেলে ক্ষুধা বাড়ায় এবং সহজে হজম করার ক্ষমতা তৈরি হয়।
২। গাজর খেলে শরীর, ত্বক নরম ও সুন্দর হয়।
৩। গাজর শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখে।
৪। গাজরে ক্যারোটিন আছে প্রচুর পরিমাণ। যা শরীরের ক্ষেত্রে অনেক উপকার।
৫। শরীরের পুষ্টি এবং বুদ্ধির বিকাশে গাজরের ভূমিকা অনেক বেশি।
৬। গাজর খেলে ত্বকের রঙ ফর্সা হয়, মুখের সৌন্দর্য বাড়ে। কারণ, গাজরে আছে রক্ত পরিষ্কার করার মতো গুণাগুণ।
৭। গাজরে ফসফরাস থাকার জন্য যারা মাথার কাজ করেন তাদের পক্ষে গাজর ও গাজরের শাক খুব বেশি উপকারী।
৮। গাজর শরীরের জ্বালা ও পেট ফাঁপা দূর করতে সাহায্য করে।
৯। বয়সের কারণে চোখের সমস্যা দেখা যায়। গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় বিটা ক্যারোটিন।
১০। যাদের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা আছে, তাদের জন্য গাজর খুবই উপকারী সবজি। এটি রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
১২। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে।যা হজমশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভালো কাজে করে। ফলে ওজন কমাতেও গাজর কার্যকর।
১৩। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ক্যালশিয়াম ও খনিজসমৃদ্ধ গাজর রাখলে হাড়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১৪। গাজরের রস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিদিনের ডায়েটে গাজর রাখা যেতে পারে।
১৫। চুল পড়া সবার একটি নিত্যদিনকার সমস্যা। যাদের খুব দ্রুত চুল পড়ে, তারা চুলের গোড়ায় গাজরের রস লাগাতে পারেন। গাজরে থাকা ভিটামিন সি চুল পড়া কমাতে ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১৬। প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে একটি করে গাজর রাখলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে দূর করা সম্ভব হয়।
১৭। গাজর মানবদেহের রক্ত কণিকা উৎপাদনে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে।
১৮। গাজরের জুস নিয়মিত পান করলে হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
১৯। গাজরের রস রক্তের জলীয় ভাগ এবং কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।
২০। গাজর শরীরে বিভিন্ন প্রজ্বলন ভাব, বাত রোগ ও গেঁটেবাত থেকে রক্ষা করে করতে সাহায্য করে থাকে।
২১। প্রতিদিন গাজরের জুস পান করলে সিগারেটের ধোঁয়ার ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে জীবন রক্ষা পেতে পারে।
২২। গাজরের জুসের পুষ্টিকর উপাদান কিডনিকে পরিষ্কার ও পরিশ্রাবণ করতে সাহায্য করে থাকে। ২৩। গাজরে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকার কারনে ত্বককে কোমল রাখে ও ত্বকের শুষ্কভাব দূর করে এবং অন্যান্য সমস্যা দূর করে থাকে।
২৪। গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে শেষের কয়েক মাস নিয়মিত গাজরের জুস পান করলে গর্ভের বাচ্চার জন্ডিসের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
সাবধানতা:
যারা নিয়মিত বিশেষ ওষুধ সেবন করেন, তাদের জন্য গাজরের জুস পান করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এতে যকৃতে বিষাক্ত উপাদান তৈরি হতে পারে। তাই সকাল ও রাতে খাওয়ার পর এবং ওষুধ সেবনের দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে গাজর রস না খাওয়া ভালো।
0 Comments