ঘরোয়া উপায়ে তৈরি কালিজিরার হারবাল তেল: তৈরি, ব্যবহারবিধি ও সংরক্ষণ :
কালিজিরার হারবাল তেল - অনেক ঔষধি গুণসম্পন্ন উপাদান কালজিরা। যার গুনের কথা বলে শেষ করার মতো না। তবে এই কালজিরার তেলে কী পরিমান উপরার আছে তা সম্পর্কে আমরা অনেকে হয়তো জানিনা। কালজিরার হারবাল তেল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক:
চুলের যত্নে কালজিরার তেল অনেক বেশি সাহায্য করে থাতে। এটি চুল পড়া কমায় চুলকে চুল লম্বা করে তোলে দ্রুত। অল্প বয়সে যাদের চুল সাদা হয়ে যায় সেই চুল কালো করার জন্য ও সাদা হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কালোজিরার হারবাল তেল এর তুলনা হয়না। এটি চুলপড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে।
সহজে ঘরোয়া উপায়ে গোটা কালোজিরা দিয়ে তেলের মিশ্রণ বানানোর উপায় জেনে নেওয়া যাক।
বানানোর উপকরণ:
১. কালিজিরা নিতে হবে ৫ চা চামচ।
২. মেথি নিতে হবে ৪ - ৫ চা চামচ।
৩. ক্যাস্টর ওয়েল (Castor oil) নতে হবে ৪ -৫ চা চামচ। ( যাদের হাতের নাগালে ক্যাস্টর অয়েল নেই, তারা খাটি সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।)
৪. সাথে নারিকেল তেল নিবেন ২৫০মিলি।
যে পদ্ধতিতে বানাবেন:
কালিজিরা আর মেথি আলাদা করে ধুয়ে শুকিয়ে নিবেন। তারপর শুকনো কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিবেন । যেন ভিতরে কোনো প্রকার পানি বা রস না থাকে।
এবার কালিজিরা আর মেথি আলাদা করে মিহি করে গুড়ো করে নিবেন। গুড়ো করার জন্য সিল পাটায় বা গ্রিন্ডারের সাহায্য নিতে পারেন।
তারপর একটা শুকনো কাচের বোতলে বা কাচের বোয়ামে/ পাত্রে কালিজিরা আর মেথির গুড়োটা রাখতে হবে।
পাত্রের মধ্যে উপকরণে যে পরিমাণ কেস্টার ওয়েল (castor oil) ও নারিকেল তেল উল্লেখ আছে সে পরিমার দিতে হবে।
তারপর চামচ দিয়ে ভালোকরে মিক্স করে নিবেন। এটুকু করার মানে তেল বানানো শেষ তা কিন্তু নয়। এ উপকরনগুলো ভালো করে মেশানোর পর কমপক্ষে ১০-১২ দিন কড়া রোদে ভালোভাবে শুকাতে হবে।। ১০-১২ দিন ভালো করে শুকানোর পর তা ব্যবহারের জন্য উপযোগী হবে।
কালিজিরার হারবাল তেল ব্যবহারের নিয়ম:
হাতের তালুতে প্রথমে পরিমানমতো তেল নিতে হবে। তারপর মাথাটা নিছের দিকে হলকা নিচু করে তেল দিতে হবে। প্রয়োজনে চুল গুলো এপাশ ওপাশ উলটে নিতে হবে।তারপর ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। আঙুল দিয়ে আলতো করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তেল লাগাতে হবে। অনেক সময় ধরে নেড়েচেড়ে তেল লাগাতে হবে। অনরক সময় তেল লাগানোর ফলে মাথার রক্ত চলাচল অনেক বেড়ে যায়। যা চুল বৃদ্ধি ও চুলপড়া রোধে কাজ রকে। মাথা আচড়ানোর সময়ও এ পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
দিনে কয়বার ও কত দিন তেল লাগাবেন:
সপ্তাহে ৩-৫ বার লাগাতে পারের। তেল লাগানোর জন্য রাতের বেলা উত্তম সময়। তবে তেল লাগানের আগে অবশ্যয় চুল পরিষ্কার থাকতে হবে। তের সারারাত রেখে পরদিন শ্যাম্পু করে ফেলবে। সপ্তাহে ২-৩ বার তেল লাগাতে পারলেও ২-৩ বারের বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচত নয়।শ্যাম্পু ব্যবহারের পর কন্ডিশনার ব্যবহার হরা উত্তম। তাতে চুলের গোড়া রুক্ষতা থেকে মুক্তি পায়। তায় যেদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না সেদিন নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবন।
সপ্তাহে ২-৩ বার করে এভাবে ৪-৫ মাস ব্যবহার করতে পারেন।
যদি এভাবে নিয়মিত লাগান তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন। তবে মনে রাখবে এটি নিয়মিত ব্যবহার না করে ভালো ফলাফলের আশা করা যাবে না।
সংরক্ষণের পদ্ধতি:
একবার কালোজিরার হারবাল তেল তৈরি করলে প্রায় ১ বছর রাখা যায়।
তবে তেলটি বানানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেনো কোন ভাবেই পানি বা পানি জাতীয় কিছু না লাগে। তেলটি তৈরি করার সময় উপকরনের মাপটা ঠিক রেখে বানাবে হবে। না হলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যেত। নাও পারে।
তেল অবশ্যয় কাচের বোতল বা পাত্রে রাখতে হবে। প্লাস্টিকের পাত্রে কোনোভাবেই রাখা যাবেনা। এতে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
সাধারণ তাপমাত্রায় রাখতে হবে। তবে নারিকেল তেল থাকার কারনে শীতকালে জমে যেতে পারে। তাই শীতকালে ব্যবহারের পূর্বে রোদে রেখে গরম করে নিতে পারেন।
0 Comments