Add

কোষ্ঠকাঠিন্য কি? What is Constipation? কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য

ছবি: সংগ্রহীত।

কোষ্ঠকাঠিন্য কি? কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য কি? - আমাদের অনেকের দৈনন্দিন জীবনে অন্যতম একটি সমস্যা হল কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation)। সকালে উঠে দীর্ঘক্ষণ বাথরুমে থাকলেও পেট পরিষ্কার হয় না। এর ফলে যা হওয়ার তাই হয়। একাধিক রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। পেট ব্যথা থেকে শুরু করে গ্যাস, অম্বল সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকে কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত ব্যক্তি। Constipation হলে শুধু পেটের সমস্যা নয়, পায়ুপথেও একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবহেলা করা একদম উচিত নয়। প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত। এর পাশাপাশি প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন। অনেকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই তারা বাথরুমে চলে যান। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু অন্য দিকে আর এক শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রে দেখা দেয়, যারা সারা দিনে বেশ কয়েকবার বাথরুমে ঢোকেন পেট পরিষ্কারের জন্য। কিন্তু তাতেও তাদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা থেকেই যায়। এমনকী অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে কমোডের উপর বসে থাকলেও মল ত্যাগ হচ্ছে না। বিভিন্ন কারণের জন্য এই সমস্যা দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য কি? কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?

তার মধ্যে অন্যতম হলো-
১। হজমের সমস্যা: হজমের সমস্যা দেখা দিলে পেটের একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু কোষ্ঠকাঠিন্যর জন্য সিংহভাগ দায়ী হজম প্রক্রিয়া, সেহেতু সঠিক ভাবে হজম না হলে Constipation দেখা দেয়। এদিকে হজমের জন্য প্রয়োজন হয় একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতার।

আমরা যখন খাবার খাই, সেই খাবার একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্য দিয়ে পাকস্থলীতে পৌঁছয়। সেখানে একাধিক পাচক রসের সংমিশ্রমে খাবার হজম হয় এবং সেখান থেকে পুষ্টিগুণ গ্রহণ করে শরীর এবং বাকি পদার্থ মল হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। শরীর থেকে মল বেরিয়ে যাওয়ার আগে তা কোলনে জমা থাকে। ২। পর্যাপ্ত পানি পান না করা: আমাদের মানব জীবনে পানির গুরুত্ব অপরিসীম পানি ছাড়া আমাদের দেহ সঠিকভাবে চলতে পারে না এই পানির একটি বড় অংশ হজমের জন্য কাজ করে। মূলত শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মল শক্ত হয়ে যায়। কারণ পানি ছাড়া মল শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে সেটি শক্ত হয়। এবং কোলন থেকে পায়ুদ্বারের মধ্য দিয়ে মল বের হতে সমস্যা দেখা দেয়। মল বের হতে না পারলে তা কোলনে জমে যায় এবং একাধিক সমস্যা তৈরি করে। যার ফলে। মগ্যাস, পেটব্যথা সহ একাধিক সমস্যা দেখা দয়। ৩। ব্যথানাশক ওষুধ সেবন: গবেষণায় বলা হয় Constipation হওয়ার একটি বড় কারণ ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা। অ্যাসপিরিন এবং ইবুপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধ যদি বেশি খাওয়া হয় তবে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। যেসব রোগী এ ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের প্রচুর পরিমাণ পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। ৪। হাইপোথাইরয়েডিজম: অনেক সময় থাইরয়েডগ্রন্থির কারণে শরীরের বিপাকক্ষমতা কমে যায়। মাঝে মাঝে বিপাকে সমস্যা হওয়ার কারণে বুক জ্বলা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হয় থাকে। ৫। অ্যালার্জি: অনেক রোগী রয়েছেন, যারা ‘ল্যাকটোস ইনটলারেন্স’ সমস্যায় ভোগেন। দুগ্ধজাতীয় খাবার কখনো কখনো মলত্যাগের সমস্যার কারণ হয়। তবে এটি অনেক সময় ডায়রিয়ারও কারণ হতে পারে। ৬। ব্যায়ামের না করা: ব্যায়াম না করা এবং খাদ্যাভ্যাস সঠিক না হওয়ার জন্যও অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৭। ভিটামিনের প্রভাব: আমরা সবাই ভালো স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন খাই। তবে এই ভিটামিন যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু করে, তাহলেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। কিছু ভিটামিন রয়েছে যেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। যেমন : ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি। ৮। বিষণ্ণতা: কোষ্ঠকাঠিন্যের আরেকটি অন্যতম কারণ বিষণ্ণতা। মানসিক এই সমস্যার কারণে অনেক সময় পরিপাক ক্ষমতায় সমস্যা হয়। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য কি? কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য কি? কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় - কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে উপরের নিয়মগুলো ও বিধি নিষেধ গুলো এবং খুব সাধারণ ও ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে তা সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন অতিরিক্ত পরিমাণ জল পান করলে, ফাইবার জাতীয় খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সেরে ওঠা সম্ভব। কিন্তু অনেক সময় পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করে। সেই সময় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভীষণ দরকার হয়। কারণ সাধারণ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও মারাত্মক কোনও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরও জানুনঃ

নখকুনি রোগের কারণ , লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা:



Post a Comment

0 Comments