শসা খাবার উপকারিতা: (Benefits of Cucumber)
শসা (Cucumber) নামটির সাথে আমরা কমবেশ সবাই পরিচিত। এটি আমরা সবজি হিসাবে খেয়ে থাকি। তবে শসা কোনো সবজি নয়। উদ্ভিদবিজ্ঞানের তথ্যমতে এটা একটি ফল। কারণ ফুল থেকে হয় শসা যাতে থাকে বীজ। একই ভাবে অনেক সবজিই আসলে ফল, যেমন- শুঁটি, ক্যাপ্সিকাম, কুমড়া এমনকি টমেটো।ফল খাওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, শসাও তার ব্যতিক্রম নয়।
শসায় রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার। এখন সারা বছর শসা পাওয়া যায়। শসা শরীরের জন্য খুব উপকারি। বেশির ভাগ রোগের ক্ষেত্রেই রোগীরা শসা খেতে পারেন, তার কারন শসার খাদ্য ও পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শুধু রূপচর্চায় নয়, শরীরকে ভেতর থেকে ঠিক রাখতে শশা নিয়মিত খাওয়া অনেক বেশি দরকার।
শসা কেনো খাবেন?
১। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে: শসায় রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, শসার খোসায়ও স্টেরল থাকে। তাই নিয়মিত শশা খেলে ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধির পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরল কোমানো সম্ভব।
২। কিডনির পাথার সারাতে: শসার জলীয় অংশ দেহের বর্জ্য ও দূষিত পদার্থ বের করতে অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলে যেতে সাহায্য করে । ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যার সমাধানে বেশ সাহায্য করে থাকে শসা।
৩। পানি শূন্যতায়: শরীরে পানির চাহিদা মেটাতে শশা খুবই উপকারী। একটি শসায় প্রায় ৯৫ শতাংশ পানি থাকে। দুর্বলতা কাটিয়ে দ্রুত সতেজ করে তুলতে পানির বিকল্প হিসাবে শসা অনেক বেশি কার্যকর।
৪। হজম সমস্যায়: এরেপসিন নামক অ্যানজাইম থাকার কারণে শসা হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে ভালো হজম হয়। তাছাড়া শসা আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।
৫। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে : শসা বা শসার রস ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী হয়ে থাকে।
৬। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে: শশায় আছে প্রচুর ভিটামিন সি, ম্যাগনিসিয়াম, সিলিকা, পটাসিয়াম ও আঁশপদার্থ। এগুলি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। শসার উপাদান উচ্চ এবং নিম্ন রক্তচাপ দুটিই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাছাড়াো এটি হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় উপকার করে।
৭। ওজন কমাতে: এতে উচ্চমাত্রায় জল থাকে। যার পরিমাণ প্রায় ৯৫%। এটিতে নিম্নমাত্রায় ক্যালরি থাকে। যার ফলে দেহের ওজন কমাতে এটি অনেক বেশি ভূমিকা রাখে।
৮। ত্বক, চুল ও নখের যত্নে: স্বাস্থ্য রক্ষার সঙ্গে ত্বক, চুল নখের জন্যও সমানভাবে উপকারী শসা । এগজিমা সারাতে ও আটকাতেও বিশেষ উপকারী হিসাবে কাজ করে। শসায় থাকা খনিজ ত্বক, চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে। এ ছাড়া সালফার ও সিলিকা চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৯। মাথাব্যথা সারাতে: ঘুম থেকে ওঠার পর যে মাথাব্যথা হয়, শরীরে অবসাদ আসে তা শশার উপাদান সমূহ যেমন – ভিটামিন বি ও সুগার এ সব সমস্যা দূর করে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক টুকরো শসা খেলে ঘুম থেকে ওঠার পরের এই সমস্যা অনেক কমে আসে।
১০। হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে: শসাতে আছে ফসফরাস যা হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী মূল পুষ্টি উপাদান। শসাতে প্রায় চার শতাংশ ফসফরাস থাকে যা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিনের খাবার তালিকায় শসা রাখা ভালো।
১১। মানসিক চাপ কমাতে: ভিটামিন বি ওয়ান, ভিটামিন বি ফাইভ এবং ভিটামিন বি সেভেন শসাতে পাওয়া যায়। যা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে।
0 Comments